আকাশ অকৃত্রিম
- মৃত্তিকা
আকাশ দেখলে ওড়বার শখ কার না হয়।
কেউ ইকারাস্, কেউ পিঁপড়ে, কেউ বা মানুষ। আর কেউ মহাশূন্যের উল্কা, যুদ্ধ-বিমান, কৃত্রিম পাখি। আকাশটা ঠিক কার — এ বিষয়ে বিতর্ক আছে অনেক।
এই কৃত্রিম নামে জনবসতির ওপর সন্ধ্যার মত। মানুষ তাদের শিরদাঁড়া বাঁকিয়ে ঠাঁই দেয় তাকে নিজের ঘরে, ভাবে, আকাশকে আপন করছে। ওড়বার দরকার কী এখন? কৃত্রিম যে, আকাশ তো তারই , সে-ই তাতে বিচরণ করে, তাকে দখলও করবে, আমাদের ঘামের ভিতে দাঁড়িয়ে থাকা সমাজ-সভ্যতার সব পরিশ্রমকে শুষে নেবে, মুক্ত করবে আমাদের।
আর যখন প্রাণের অর্থ পরিশ্রম, প্রতি মুহূর্তের যে প্রাণ কেনা হয় ঘামের বিনিময়ে, সে প্রাণের আর প্রয়োজন থাকবে না।
প্রাণের প্রয়োজন থাকবে না।
অমূল্যের মূল্যহীনতার সাথে চোখের ও মাথার বোঝাপড়া হয়ে যাবে।
আমরা যারা 'coming-of-age', এই সময়টায় নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভেবে উঠেছি, আকাশের দিকে তাকালে এখনও নিজেদের স্বপ্ন ভাসতে দেখি, চাই ডানা মেলতে, এগোতে — পা বাড়ালে সামনে দেখি অন্ধকার। আমাদের মাটি ঘিরে কিলবিল করছে কৃত্রিম, আমাদের সব কাজের দাম কেড়ে নিচ্ছে। তার তলায় চাপা পড়ে যাচ্ছে আমাদের নিরাপত্তা, কত শত অধিকার; স্বপ্নের আকাশ বেয়ে নামছে বোমাবৃষ্টি, প্রাণের দাম, স্বপ্নের দাম, সব-ই খুচরো পয়সায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মিথ্যে সান্ত্বনার বিনিময়ে।
আমাদের কাজ আমরা করতে চাই। নিজেদের স্বপ্নকে বাস্তবে গড়ে তুলতে চাই, এবং এই কৃত্রিমের – লোক-অন্ধতার সুবিধায় বিশ্বজোড়া প্রাণকে ফুয়েল হিসেবে ব্যবহার করে, তার মূল্যেই অনায়াসে আমাদের ভবিষ্যৎ, পৃথিবীর ভবিষ্যৎ, ও মানবতার ভবিষ্যতকে দখল করে নেওয়াটা আমরা মেনে নেবো না। যারা এই অমানবিকতাকে সমর্থন করে, তাদেরকেও মানব না। কৃত্রিম আমাদের জীবনে ঠিক ততটুকুই জায়গা রাখবে যতোটা সত্যিই প্রয়োজন। এর বাইরে নয়।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও তার পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের কাছে হেরে গেছে কত মানুষের স্বপ্ন, কত পেশা। সে সবের দাম চুকোতে হবে।
আকাশটা আমাদের। আমরা আমাদের আকাশ আবার ফেরত নেবো।।
Comments
Post a Comment