হ্যাশট্যাগ

- অমৃতা মুখার্জি, প্রথম বর্ষ


জন্মকে রাখা যায় প্রদর্শনী কাঁচে

আলো ও ভাষার মেপে নেওয়া ঘরে।

নাম, রং, দাগ— সবই এখন উপাদান;

প্রতিরোধ মঞ্চে বিজ্ঞাপন জড়ো করে।

জাতির গায়ে যে গৃহযুদ্ধ, তা এখন

রঙিন চিত্রনাট্যে ক্লাইম্যাক্সের যন্ত্রণা।

চরিত্রগুলো নিপীড়নের মুখোশে,

কিন্তু চুক্তিতে বাঁধা তাদের কান্না।

“আমি দলিত,” “আমি কুইয়ার,”—

ব্যথা যেন পরিচয়ে ঠেকানো ধ্বনি।

বলো, যন্ত্রণা যদি মানচিত্রে বাঁধা,

তবে বাণিজ্যেই বা তার অঙ্ক কেমনি?

শহিদ মিনারে এখন ফটোসেশন,

হ্যাশট্যাগে উঠে আসে ‘রেজিস্টান্স’।

খোলা চুলে গর্জে ওঠা প্রতিবাদ,

পেছনে অথচ পিআরের কনফারেন্স।

ব্যথা এখন কন্টেন্ট ক্যালেন্ডারে—

কোথায় কোন দিন রাগ জ্বলবে ঠিক,

বঞ্চনার ভাষা ছাঁটা সাবটাইটেলে,

ভিউ বাড়ে, কমে ব্যথার দিক।

চেতনার ছবি, নিপীড়নের লোগো,

উৎসবে ওঠে ট্রেন্ডিং স্লোগান;

যে চোখ জ্বলেছে অন্ধকারে একা,

তাকেই এখন চাই 'ইনফ্লুয়েন্সার' ধ্বজাধ্বনান।

ফ্যাশনের বুকে আজ ফাটলের ছায়া,

ক্যাটওয়াকে হাঁটে ‘পেইন থিম’–

কে কখন কাঁদবে, কে বলবে "না",

তারও আগে ঠিক হয় রিহার্সেল স্ক্রিম।

প্রতিরোধ নয় আর পথের আওয়াজ,

বরং চুক্তিভিত্তিক প্রচার-নকশা—

‘ব্যথা’ এখন এক্সেল শিটে বাঁধা,

তার নিচে পড়ে আছে নীরব ইতিহাস।

Comments