শব্দের শেকল

 রাস্তার ধুলোয় পায়ের শব্দ,

গলির মুখে জমা ভিড়,

হাসির ছলেই ছুরির ফলা,

বুকে বিঁধে ওঠে প্রতীক্ষিত।

"মেয়েলি!"— এক চিলতে শব্দ,

দশটা মুখের বাঁকা হাসি,

ছেলেটি দাঁতে দাঁত চেপে শিখে—

নরম হওয়া পাপের চেয়ে কম কী?


"থাপ্পড় খাবি!"— রসিকতার ছলে,

শব্দটি থামে না, তীক্ষ্ণ ধার,

হাতের অভ্যেস হয় কালক্রমে,

গৃহস্থালির নীরব দেওয়াল।


"স্ত্রী-জাত!"— ধুলো ওড়ে,

গাড়ির হর্ন, চায়ের দোকান,

কেউ শোনেনি, তবু শব্দগুলি

শরীরে জমায় রক্তের দাগ।


অন্ধকার রাতে সদর দরজায়

একটি কান্না, একটি চিৎকার,

বাইরে শব্দ— "স্বামী বলে কথা!"

ভিতরে এক নারীর দেহচেরা ধিক্কার।


একটি মেয়ে লাশ হয়ে গেল,

শিরোনামে ছোট্ট ক'টা লাইন,

"ঘরে কলহ, স্বামীর হাতে মৃত্যু"—

খবরের ভাষায় গল্প বড্ড মোলায়েম।


এ ভাষাই তো জল্লাদের হাত,

এ ভাষাই তো দেয় ছুরির নাম,

এ ভাষাই তো ন্যায়ের পিঠে

হাসির ফাঁস লাগায় অনায়াস।

 

আর কবে, কবে?

ভাষা বদলাতে হবে,

কথারা উঠুক দাবির মতো,

শব্দের শেকল ভেঙে যাক,

শব্দে জন্ম নিক নবজন্ম!


-অমৃতা মুখার্জি, প্রথম বর্ষ


-Sketch by Samriddhi Dey, HS passout



Comments