যারা ত্যাজ্য...
রাস্তাঘাটে যাতায়াতের সময় আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোকের মুখে বিভিন্ন রকম খিস্তি বা গালাগালি শুনি। গালাগালি ভারী অদ্ভুত জিনিস। খুশিতেও ব্যবহার করে, দুঃখেও মানুষ ব্যবহার করে আবার রাগেও মানুষ ব্যবহার করে এবং পতিতাদের নিয়ে গালাগালি আমরা প্রায়শই শুনি। পতিতাদের কষ্টকর জীবনযাত্রার গল্প আমাদের অজানা নয়। তবুও নির্দ্বিধায় সেসব নিয়ে খিস্তি খামারি করা মশকরা করা বা ইয়ার্কি করাতে আমাদের বিন্দুমাত্র লজ্জা বোধ হয় না। রাস্তার অটোচালক বা রিক্সা চালক সবাই একে অপরকে এই সমস্ত কথা বলে চলে যায়। এই সমস্ত গালাগালি অনিচ্ছাকৃতভাবে। হলেও তারা একে অন্যের মাকে ছোট করে সর্বোপরি তারা এক রকমের শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে ব্যঙ্গ করে। দুঃখজনক বিষয় হলো বর্তমান সমাজে স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যেও এই সমস্ত ভাষা নির্দ্বিধায় প্রচলিত আছে। কখনো কখনো সেটা স্কুলের মধ্যেই। আরো রোমাঞ্চকর ব্যাপার যারা এ সমস্ত বলছে তাদের একাংশ এগুলো মানে না জেনেই বলছে।
পতিতা বা বহুল জনপ্রিয় শব্দ 'খানকি' তাদের জীবিকা নির্বাহ করে ভীষণই কষ্টকর ভাবে, এবং সে কষ্টের সিংহভাগ মানসিক কারণ। কেউ স্বেচ্ছায় এই প্রফেশনে আসে না। তারাও কখনো কাউকে বিশ্বাস করে ঠকে, যে কারণে তাদের শেষ ঠিকানা হয় সেই সব অন্ধকার গলি, যেখান থেকে তাদের সব স্বপ্নের ভবিষ্যতের জানলা এক এক করে বন্ধ হয়ে যায় চিরকালের জন্য।
সমাজ হিসেবে আমরা নিজেদের সংযত করতে পারিনি এবং তার প্রভাব আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ওপর পড়েছে। অশ্লীল ভাষা তো শুধু নয়, এটা রিফলেক্ট করছে একটা মারাত্মক নীতিগত শিক্ষার অভাব কে, তারা না নিজেদের আপন মা কে সম্মান করতে পারছে, না পারছে কিছু সৎভাবে জীবিকা নির্বাহ করা কয়েকজন হতভাগ্য নারীদের। আমরা সত্যিই চিরকাল ধৃতরাষ্ট্রের মতো মৌন অংশগ্রহণ করে এসেছি সর্বত্র সব বিষয় এবং দেখেছি কিভাবে অশিক্ষার কালো ছায়া একটা একটা করে সব নীতিবোধ মুছে ফেলছে মানুষের মন থেকে।
হয়তো এর শেষ কোথায় কেউ জানে না হয়তো আরও গভীরে, হয়তো আরো অন্ধকারে..
- প্রত্যক চক্রবর্তী, একাদশ শ্রেণী
- Painting by Roopkatha Dey, Madhyamik passout
কিন্তু এই প্রতিকূল গালাগালি অনেক সময় বিচলিত মন কে শান্তি দেয় , আঘাত পেয়ে হোক বা কোনো মানসিক চাপ।সেই সময়ে কি করা উচিত ?
ReplyDeleteঅর্থাৎ আমি যদি কাউকে না জানিয়ে না শুনিয়ে নিজ বিধিতে আপন ঘরে বা মনে মনে গালিগালাজ করি সেটাও কি সমাজ কে কালো অন্ধকারে ঠেলে দেবে ?